ঘর সাজাতে প্রচুর অর্থ ও সময় ব্যয়ের প্রয়োজন নেই, প্রয়োজন শুধু সঠিক প্ল্যানিংয়ের। ঘরের সাজ হতে হবে এমন, যা দেখলেই মন ভাল হয়ে সম্প্রতি ঘর সাজানোর এক নতুন ‘ট্রেন্ড’ চালু হয়েছে। মনের যত্ন নিতে কেমন করে ঘর সাজাবেন?
ঘর সাজানোর ব্যাপারটা কি কেবল ব্যয়বহুল ও বিলাসিতা? এমন প্রশ্ন সবার মনে জাগতে পারে।
সঠিক ভাবে ঘর সাজানো মাধ্যমে আপনার ঘর হয়ে উঠবে অনন্য ও ঘরে আসা অতিথিদের জন্য আকর্ষণে কেন্দ্রবিন্দু।
ঘরের দেয়ালগুলোকে সঠিক উপায়ে ব্যবহারের মাধ্যমে ঘরের সাজসজ্জার পরিবর্তন আনা সম্ভব।ঘরে দেয়ালকে সাজিয়ে তুলতে ফ্রেমের প্রাধান্য অত্যাধিক।দেয়ালকে ফ্রেমের মাধ্যমে সাজাতে কিছু বিষয়ে দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে,
১. আপনার ঘরের ওয়াল বা দেয়ালের টেক্সচার ঘরের আভ্যন্তরিক সৌন্দর্যে নিয়ে আসতে পারে নান্দনিক পরিবর্তন। একঘেয়েমি গুটি কয়েক রঙের মধ্য থেকে দেয়ালের জন্য রঙ বাছাই করার দিন এখন আর নেই। বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বাহারি রঙ, টেক্সচার এবং ফিনিশিং, যা আপনার ঘরের দেয়ালে এনে দিতে পারে নতুনত্বের ছোঁয়া।
টেক্সচার ফ্রেমিং একটি জনপ্রিয় ডিজাইন এলিমেন্ট বা সাধারণ একটি উপাদান যার মাধ্যমে স্বল্প খরচেই দেয়ালের ত্রুটি বা অপূর্ণতাকে আড়াল করা যায়। তাই আপনার ঘরের নান্দনিকতাকে বাড়িয়ে তুলতে বিভিন্ন ধরনের ওয়াল টেক্সচার সম্পর্কে জানা খুবই প্রয়োজন। যা সাধারণ একরঙা দেয়ালগুলো থেকে আপনার ঘরকে করে তুলবে অনেক বেশি আকর্ষণীয়।
আপনি যদি একটি বড় দেয়ালকে অনেকগুলো ফ্রেম দিয়ে সাজান, তবে চেষ্টা করবেন বিভিন্ন সাইজের ছোট বড় ফ্রেম একত্রে ব্যবহার করা। এই যে আপনার সৃজনশীলতাকে প্রকাশ করার পাশাপাশি একটি ঘরকে সুসজ্জিত রূপ দিবে।
২. মেঝেতে পাতার গালিচা বা রাগস আপনার ঘরের সৌন্দর্যে নিয়ে আসতে পারে নতুনত্ব এবং গালিচাটি যে উপাদান দিয়ে তৈরি সেটিও ঘরের সৌন্দর্যে ভূমিকা রাখে। এটি আপনার ঘরে থাকা আসবাবপত্রের সৌন্দর্যও ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করে। রাগস বা গালিচা শুধুমাত্র আপনার ঘরের মেঝেকেই আবৃত্ত করে রাখে না বরং এর মাধ্যমে ঘরকে নান্দনিকতাও ফুটিয়ে তোলা যায়। ঘরের বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে সঠিক রাগ বা গালিচাটি নির্বাচন করা আপনার জন্য কিছুটা বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে।
৩. কর্ণার সাজানো, ঘরকে একটু অন্যরকম করে সাজাতে ঘরের কোনো খালি জায়গা সাজানো হতে পারে অসাধারণ একটি উদ্যোগ। কর্ণার সাজাতে প্রয়োজন পরে খুব কম সময় আর কাজের। তাই ঘর সাজাতে গিয়ে কর্ণার সাজিয়ে নিলেই ঘর পায় একটি নতুন আবহ ও পরিবেশ। মানুষ তাদের ঘরের কর্ণার সাজিয়ে বাড়িয়ে নিয়েছে ঘরের ব্যবহার্য জায়গা। কেউ কেউ আবার কর্ণার সবুজ গাছ দিয়ে সাজিয়ে ঘরে আনতে পেরেছে সজীবতা। কেউ কেউ আবার কাজিয়ে লাগিয়ে হোম স্টুডিও হিসেবেও। আপনিও সাজিয়ে তুলতে পারেন আপনার ঘরের কর্ণার।
৪. স্টোরেজ ম্যানেজমেন্ট , যেহেতু হাইব্রিড কাজের জায়গার কারণে স্কুল, অফিস কিংবা অন্যান্য কাজ ও ঘরের মধ্যকার সম্পর্ক হয়েছে জটিল, তাই ঘরকে অর্গানাইজ করা হয়েছে আরোও চ্যালেঞ্জিং। সবাই তাই চায় বাড়তি জায়গা যার মাধ্যমে অফিসের কাজের জিনিসপত্র বা ঘরের শো-পিস, সবই যেন গুছিয়ে রাখা যায়। তাই এটি বিস্বয়কর নয় যে ২০২২ এ মানুষ ঘরের স্টোরেজ ম্যানেজমেন্টকে প্রাধান্য দিবে। স্টোরেজ ব্যবস্থায় মানুষ যেমন যুক্ত করে রঙ, এবং বিভিন্ন ডিজাইন, তেমনি চেয়েছে সহজলভ্যতা যা প্রতিদিনের কাজকে করবে দ্রুত।
৫. কেন্দ্রীয় দেয়াল একটি কেন্দ্রীয় দেয়াল পারে আপনার ঘরে বাড়তি আকর্ষণ যোগ করতে। পুরো রুমকে নতুন করে তৈরি করার চেয়ে একটি দেয়ালকে সাজানো যেমন খরচ কমায়, তেমনি কমতি রাখে না আকর্ষণ তৈরিতেও। যেহেতু ২০২২ এ সবাই সাধাসিধে আর কম খরচে ঘর সাজাতে চেয়েছে, তাই কেন্দ্রীয় দেয়াল তৈরির মাধ্যমে তা করাটা বেশ সহজ। নিজেকে ও নিজের প্রিয়জনদের অনুপ্রেরণা দিতে সাজাতে পারেন কিছু মটিভেশনাল ফ্রেম অথবা ইসলামিক ফ্রেমে দিয়ে।
তাই ঘর সাজানোর কাজটিকে ব্যয়বহুল ভাবার কিছুই নেই, ঘর সাজানো হোক আনন্দময় ও সহজসাধ্য।